
সুন্দরবন সংলগ্ন বঙ্গোপসাগরের জনপদ কয়রায় অনুষ্ঠিত হয়েছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী আয়োজিত ঐতিহাসিক ছাত্র-যুব সমাবেশ। শনিবার (১১ অক্টোবর) বিকেলে কয়রা কপোতাক্ষ কলেজ মাঠে অনুষ্ঠিত এই সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন দলটির সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক সংসদ সদস্য মিয়া গোলাম পরোয়ার।
তিনি বলেন, “কালো টাকা, মনোনয়ন বাণিজ্য, চোর, ডাকাত ও চাঁদাবাজদের যারা নির্বাচিত করতে পারবে না, তারাই পিআর পদ্ধতির বিরোধিতা করছে।” তিনি জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি নিশ্চিত করতে গণভোটের দাবি জানান এবং বলেন, জনগণ যদি পিআর পদ্ধতির বিপক্ষে ভোট দেয়, জামায়াত সেই রায় মেনে নেবে।
গোলাম পরোয়ার বলেন, “দেশে নির্বাচনের লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নেই। প্রশাসন একটি দলকে খুশি করতে তাদের দিকে ঝুঁকে পড়েছে। প্রশাসনকে অবশ্যই নিরপেক্ষ হতে হবে।” তিনি আরও বলেন, “৫৪ বছরের ইতিহাসে অনেক শাসনব্যবস্থা এসেছে-গিয়েছে, কিন্তু এখন দেশের মানুষ জামায়াতকে রাষ্ট্রক্ষমতায় দেখতে চায়। সুন্দরবন সংলগ্ন বঙ্গোপসাগরের জনপদ থেকে যে দাঁড়িপাল্লার জোয়ার সৃষ্টি হয়েছে, সেটিকে পার্লামেন্ট পর্যন্ত পৌঁছে দিতে হবে।”
কয়রা উপজেলা আমির মাওলানা মিজানুর রহমানের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও খুলনা-৬ আসনের প্রার্থী মাওলানা আবুল কালাম আজাদ এবং ইসলামী ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি জেনারেল নূরুল ইসলাম সাদ্দাম।
সমাবেশে আরও উপস্থিত ছিলেন জেলা জামায়াতের নায়েবে আমির মাওলানা গোলাম সরোয়ার, জেলা সেক্রেটারি মুন্সি মিজানুর রহমান, সহকারী সেক্রেটারি মুন্সি মঈনুল ইসলাম, অধ্যাপক মিয়া গোলাম কুদ্দুস, অধ্যাপক গাউসুল আযম হাদী, ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলনের সহ-সভাপতি হাফেজ মো. আসাদুল্যাহ আল গালিব, কয়রা উপজেলা হিন্দু কমিটির সাধারণ সম্পাদক কিরন চন্দ্র মণ্ডলসহ বিভিন্ন পর্যায়ের রাজনৈতিক ও সামাজিক নেতৃবৃন্দ।
মিয়া গোলাম পরোয়ার বলেন, “আমীরে জামায়াত বলেছেন, আমরা ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করেছি, আগামীর সংগ্রাম হবে দুর্নীতির বিরুদ্ধে। অতীতে জামায়াতের মন্ত্রীরা ছিলেন, কিন্তু তাদের বিরুদ্ধে কেউ দুর্নীতির প্রমাণ দিতে পারেনি। ভবিষ্যতে জামায়াত ক্ষমতায় গেলে কোনো এমপি ফ্রি প্লট, ট্যাক্স ফ্রি গাড়ি বা ফ্ল্যাট নেবেন না।”
মাওলানা আবুল কালাম আজাদ বলেন, “বিগত তিনটি নির্বাচনে জনগণ ভোট দিতে পারেনি। এবারের নির্বাচন মহা উৎসবের মতো হবে। ইসলামের বাংলাদেশ গঠনের সুযোগ এসেছে। ইসলামি দলগুলো ঐক্যবদ্ধভাবে মাঠে নেমেছে।”
নূরুল ইসলাম সাদ্দাম বলেন, “আজকের এই সমাবেশ প্রমাণ করছে, আগামীর বাংলাদেশ কোন পথে যাবে। তরুণ প্রজন্ম জেগে উঠেছে এবং তারা আগামী নির্বাচনে দুর্নীতিবাজদের প্রতিহত করবে।”