
সত্য প্রকাশ ন্যায়ের সাথে
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচনে প্রার্থীদের আনুষ্ঠানিক প্রচারণা শুরু হয়েছে আজ থেকে। আগামী ৯ সেপ্টেম্বর সকাল ৮টা থেকে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। এর আগে ৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত প্রার্থীরা প্রচারণা চালাতে পারবেন। তবে ছাত্রীদের হলে প্রচার কার্যক্রম চলবে রাত ১০টা পর্যন্ত। নির্বাচনী প্রচারণা চলাকালীন সময়ে কঠোরভাবে মানতে হবে আচরণবিধি।
সোমবার ছিল মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষ দিন। এদিন মোট ২১ জন প্রার্থী তাদের প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেছেন। জানা গেছে, ঘোষিত প্যানেলে জায়গা না পাওয়া এবং দলীয় সিদ্ধান্তের কারণে কয়েকজন ছাত্রদল সমর্থিত প্রার্থীও প্রতিদ্বন্দ্বিতা থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন। অন্যদিকে বিভিন্ন অভিযোগে বাতিল হওয়া ৩৪ জন প্রার্থী আপিল করেন এবং যাচাই-বাছাই শেষে তাদের মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করা হয়।
গত রোববার ডাকসু ও হল সংসদ নির্বাচনের আপিল ও আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ নিষ্পত্তির লক্ষ্যে গঠিত ট্রাইব্যুনাল কমিটি বৈঠক করে। বৈঠকে জুলিয়াস সিজার তালুকদার ও বায়েজিদ বোস্তামী নামের দুই শিক্ষার্থীকে নিষিদ্ধ সংগঠনের সঙ্গে সম্পৃক্ততা এবং সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার প্রমাণের ভিত্তিতে ভোটার ও প্রার্থী তালিকা থেকে বাদ দেওয়ার সুপারিশ করা হয়। পরে সোমবার তাদের প্রার্থিতা ও ভোটাধিকার বাতিল ঘোষণা করা হয়।
অন্যদিকে নির্বাচনকে ঘিরে ক্যাম্পাসের নিরাপত্তা ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন পুলিশের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেছে। উপাচার্য নিয়াজ আহমদ খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে প্রধান রিটার্নিং কর্মকর্তা মোহাম্মদ জসীম উদ্দিন, রিটার্নিং কর্মকর্তা গোলাম রব্বানী, প্রক্টর সাইফুদ্দীন আহমদ, ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী, সিটি এসবির ডিআইজি মীর আশরাফ আলী, রমনা জোনের উপকমিশনার মো. মাসুদ আলম এবং শাহবাগ থানার ওসি মোহাম্মদ খালিদ মুনসুর উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকে ভোটকেন্দ্রের নিরাপত্তা, শিক্ষার্থীদের নির্বিঘ্নে ভোট প্রদান এবং সুষ্ঠুভাবে ভোট গণনার বিষয়গুলোতে বিশেষ পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়।
নির্বাচনী আচরণবিধি অনুযায়ী প্রার্থীরা কেবল সাদাকালো পোস্টার, লিফলেট ও হ্যান্ডবিল ব্যবহার করতে পারবেন। সেখানে প্রার্থীর নিজের সাদাকালো ছবি ছাড়া অন্য কোনো ছবি বা প্রতীক ব্যবহার করা যাবে না। ক্যাম্পাস বা হলের দেয়াল, স্থাপনা, যানবাহন, বৈদ্যুতিক খুঁটি কিংবা গাছে পোস্টার লাগানো নিষিদ্ধ। এছাড়া দেয়াল লিখন, রাসায়নিক ব্যবহার করে চিত্রাঙ্কন, তোরণ নির্মাণ বা আলোকসজ্জা করা যাবে না। তবে অস্থায়ী শামিয়ানা, মঞ্চ বা প্যান্ডেল স্থাপন করার সুযোগ থাকবে। ধর্মীয় উপাসনালয়, শ্রেণিকক্ষ, পাঠকক্ষ এবং পরীক্ষার হলে কোনো ধরনের প্রচারণা চালানো যাবে না।
ভোটারদের কোনো প্রকার উপঢৌকন, বকশিস বা খাবার পরিবেশনও নিষিদ্ধ। আক্রমণাত্মক বক্তব্য দেওয়া, গুজব ছড়ানো বা উসকানিমূলক মন্তব্য প্রচারণার আওতায় আনা যাবে না। সভা, সমাবেশ কিংবা শোভাযাত্রা করার জন্য অন্তত ২৪ ঘণ্টা আগে প্রধান রিটার্নিং কর্মকর্তার অনুমতি নিতে হবে। প্রতিটি হলে একটি এবং বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে সর্বোচ্চ তিনটি প্রজেকশন মিটিং করার সুযোগ থাকবে। এছাড়া অনলাইন বা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ইতিবাচক পদ্ধতিতে প্রচারণা চালানো যাবে। তবে ভোটার ছাড়া বাইরের কেউ বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় প্রচারণায় অংশ নিতে পারবেন না।
আচরণবিধি ভঙ্গ করলে সর্বোচ্চ ২০ হাজার টাকা জরিমানা, প্রার্থিতা বাতিল, বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার বা আইন অনুযায়ী অন্যান্য দণ্ডের বিধান রয়েছে।