
সত্য প্রকাশ ন্যায়ের সাথে
অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরাইলি বাহিনীর হামলা আরও তীব্র হয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় অন্তত ৭১ জন ফিলিস্তিনি নিহত এবং ২৫১ জন আহত হয়েছেন। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় শুক্রবার (২২ আগস্ট) রাতে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
শুধু গাজা সিটিতেই ৩৭ জন নিহত হয়েছেন, যেখানে ইসরাইল নতুন করে ভয়াবহ সামরিক অভিযানের পরিকল্পনা করছে। আলজাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়, শেখ রাদওয়ান এলাকার একটি স্কুল ভবনের ওপর ইসরাইলি কোয়াডকপ্টার থেকে বিস্ফোরক নিক্ষেপ করা হলে অন্তত ১২ জন বেসামরিক নাগরিক প্রাণ হারান। ওই স্কুলে বহু ফিলিস্তিনি পরিবার তাঁবু ফেলে আশ্রয় নিয়েছিল। এছাড়া গাজা সিটির তুফাহ এলাকায় ইসরাইলি বাহিনীর হামলায় আরও একজন নিহত হন বলে আল-আহলি হাসপাতালের সূত্র জানিয়েছে।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানায়, খাবারের সংকট ও অপুষ্টিতে নতুন করে দুজন মারা গেছেন, যার মধ্যে একটি শিশু রয়েছে। ফলে দুর্ভিক্ষ-সম্পর্কিত মোট মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৭৩ জনে, এর মধ্যে ১১২ জন শিশু।
মন্ত্রণালয়ের তথ্যে বলা হয়েছে, এখনো বহু মানুষ ধ্বংসস্তূপে বা রাস্তায় আটকা পড়ে আছেন। ইসরাইলি হামলা ও উদ্ধার সরঞ্জামের অভাবে উদ্ধারকর্মীরা তাদের কাছে পৌঁছাতে পারছেন না। ১৮ মার্চ থেকে যুদ্ধবিরতি ও বন্দি বিনিময় চুক্তি ভঙ্গ করে ইসরাইল নতুন করে সামরিক অভিযান শুরু করার পর এ পর্যন্ত ১০ হাজার ৭১৭ জন ফিলিস্তিনি নিহত এবং ৪৫ হাজার ৩২৪ জন আহত হয়েছেন।
অন্যদিকে, মানবিক সহায়তা নিতে যাওয়া সাধারণ মানুষও ইসরাইলি বাহিনীর হামলার শিকার হচ্ছেন। গত ২৪ ঘণ্টায় এ ধরনের হামলায় ২৪ জন নিহত এবং ১৩৩ জন আহত হয়েছেন। শুধু ২৭ মে থেকে এ পর্যন্ত সহায়তা নিতে গিয়ে ২ হাজার ৬০ জন প্রাণ হারিয়েছেন এবং আহত হয়েছেন আরও ১৫ হাজার ১৯৭ জন।
ইসরাইলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী সম্প্রতি হুঁশিয়ারি দেন, হামাস যদি যুদ্ধ বন্ধে ইসরাইলের শর্ত মেনে না নেয়, তবে গাজার বৃহত্তম শহরকে পুরোপুরি ধ্বংস করে দেওয়া হবে।
প্রসঙ্গত, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে গাজায় ইসরাইলি হামলায় এখন পর্যন্ত অন্তত ৬২ হাজার ২৬৩ জন নিহত এবং এক লাখ ৫৭ হাজার ৩৬৫ জন আহত হয়েছেন। অপরদিকে, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবরের হামলায় ইসরাইলে এক হাজার ১৩৯ জন নিহত এবং ২০০ জনের বেশি মানুষকে জিম্মি করা হয়েছিল।